রাসুল(সঃ) এর চরিত্র হনন করে যা লিখেছিলেন মালাউন অভিজিৎ রায়


মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা এবং ধর্মবিরোধী লেখক-ব্লগার অভিজিৎ রায়ের বিরুদ্ধে অনেক আগে থেকেই ইসলাম এবং রাসুল(সঃ) এর  বিরোধিতা করে লেখালেখির অভিযোগ ছিলো। রাসুল(সঃ) এর চরিত্র হনন করে বেশ কিছু লেখা লিখেছিলেন অভিজিৎ রায়। যেগুলো এখনো তার ফেসবুক আইডিতে রয়েছে।  ধারণা করা হচ্ছে জঙ্গিরা এই কারনেই তাকে হত্যা করে থাকতে পারে। ফারাবি শফিউর রহমান নামে আরেকজন ইসলামপন্থী ব্লগার বেশ আগে থেকেই তার এসব লেখা নিয়ে অনলাইনে অভিযোগ করে আসছিলেন এবং তাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছিলেন। রাসুল(সঃ) কে নিয়ে অভিজিৎ রায়ের একটি লেখার ব্যাপারে ফারাবি তার ব্লগে যে অভিযোগটি করেন তা এইরকমঃ - 

মুক্তমনার প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায় দীর্ঘদিন ধরে কোরআন হাদীস বিকৃতি করে অনলাইনে প্রচার করছে। যে সব বাক্য হাদীসে বলা নাই তাও অভিজিৎ রায় উনার স্ক্রীনশটে দেয়া হাদীস গুলিতে ব্র্যাকেট আকারে দিয়ে দেয়। আমি এখন আপনাদের সামনে অভিজিৎ রায়ের কিছু হাদীস বিকৃতির নমুনা দেখাব। উম্মুল মুমেনীনদের নিয়ে লেখা অভিজিৎ রায়ের লেখায় অভিজিৎ রায় বুখারী শরীফের ১ম খন্ডের সালাত অধ্যায়ের ৩৬৭ নং হাদীস বর্ননা করেছেন যেখানে নাকি বলা হয়েছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মুমেনীন সাফিয়ার রুপ লাবণ্য দেখে তাকে বিয়ে করতে পাগল হয়ে গেছিল। নাউযুবিল্লাহ। কিন্তু বুখারী শরীফের ১ম খন্ডের সালাত অধ্যায়ের ৩৬৭ নং হাদীসে সাফিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহা কে নিয়ে কোন কথাই বলা নেই।

বুখারী শরীফের ১ম খন্ডের সালাত অধ্যায়ের ৩৬৭ নং হাদীস টি আমি এখানে হবুহু তুলে ধরছি – “ আবূ মা’মার ‘আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, ‘আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে একটা বিচিত্র রঙের পাতলা পর্দার একটা কাপড় ছিল। তিনি তা ঘরের একদিকে পর্দা হিসাবে ব্যাবহার করছিলেন। রাসূল ﷺ বললেনঃ আমার সম্মুখ থেকে এই পর্দা সরিয়ে নাও। কারণ সালাত (নামায) আদায় করার সময় এর ছবিগুলি আমার সামনে ভেসে ওঠে। ” আপনারা দেখেন এই হাদীসে আসছে ঘরের একটি পর্দার কথা কিন্তু অভিজিৎ রায় কি সুন্দর ভাবে ঘরের পর্দার জায়গায় উম্মুল মুমেনীন সাফিয়া কে টেনে নিয়ে আসছেন। হ্যা বুখারী শরীফের ১ম খন্ডের সালাত অধ্যায়ের ৩৬৪ নং হাদীসে সাফিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহার কথা বলা হয়েছে।

কিন্তু ৩৬৭ নং হাদিসে নয়। বুখারী শরীফের ১ম খন্ডের সালাত অধ্যায়ের ৩৬৭ নং হাদীসে সাফিয়াকে নিয়ে এই জাতীয় কোন কথাই নাই। তাই আমরা প্রথমেই বুঝলাম যে অভিজিৎ রায় হাদিসের ক্রমিক নাম্বার অনুসারে আমাদের কাছে হাদীস বর্ননা করে নি। তাই এই অভিজিৎ রায় যে একটা ভণ্ড এর প্রথম প্রমান আমরা পেলাম। উম্মুল মুমেনীনদের নিয়ে লেখা অভিজিৎ রায়ের ১ম নোটে এই কুলাঙ্গার অভিজিৎ রায় বুখারী শরীফের একটি হাদীসে নিজে থেকে কয়েক লাইন লাগিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে চরম মিথ্যাচার করেছে।

অভিজিৎ রায়ের ১ম নোটে সে লিখেছে- “৬২৮ সালের মে মাসে খাইবার দখলের পর যেদিন মোহাম্মদের দল সাফিয়ার পিতা, স্বামী, ভাই এদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করে, ঠিক সেদিনই মোহাম্মদ সাফিয়াকে নিয়ে নিজের তাবুতে রাত কাটান। প্রথমে অবশ্য দিহাইয়া নামের এক জিহাদী সৈনিক সাফিয়াকে পছন্দ করেছিলেন উপভোগের জন্য। পরে আরেকজন সাহাবির মুখে নবীজী যখন সাফিয়ার রূপলাবণ্যের কথা শুনলেন, আল্লাহর রাসুল তাকে সামনে নিয়ে আসার জন্যে আদেশ দিলেন। নবীজী ভালভাবে তাকিয়ে দেখলেন এই অপূর্ব সুন্দর দেহবল্লরী তো তারই উপযুক্ত। নবী সেই সাহাবীকে বললেন, ‘একে আমার জন্যে রেখে তুমি অন্য কাউকে নিয়ে যাও’, এরপরই মহানবী সাফিয়াকে নিজের ‘স্ত্রী হিসেবে’ নির্বাচিত করে তার শয্যাসঙ্গি হন। বুখারী শরীফের ১:৮ :৩৬৭”

1898954_1465513910334804_509180246_n


আমি আগেই আপনাদের কে বলছি যে বুখারী শরীফের ১ম খন্ডের সালাত অধ্যায়ের ৩৬৪ নং হাদীসে সাফিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহার কথা বলা হয়েছে, ৩৬৭ নং হাদিসে নয়। এখন দেখি তো বুখারী শরীফের ৩৬৪ নং হাদিসে কি বলা হয়েছে- “‘‘দিহাইয়া এসে বললেন- হে নবী , আমাকে বন্দিনী নারীদের মধ্য হতে একজন দাসীকে দিন। নবী বললেন- যাও তোমার যেটা পছন্দ সেটা নিয়ে নাও। উনি তখন সাফিয়া বিনতে হুইকে নিলেন। এক লোক এসে বললেন- হে নবী আপনি দাহিয়াকে সেই নারী দিয়েছেন যে নাকি খায়বারের সর্দারের স্ত্রী এবং সে কেবল আপনারই উপযুক্ত। নবী তখন তাকে সাফিয়াকে তাঁর কাছে আনার জন্য হুকুম করলেন। সাফিয়াকে তার সামনে আনা হলে, তিনি দেখে দিহাইয়াকে অন্য নারী নিতে বললেন ও সাফিয়াকে নিজের কাছে রেখে দিলেন এবং বিয়ে করলেন’ (বুখারী, বই ১, ভলিয়ুম-৮, হাদিস-৩৬৭)।’



এবার খেয়াল করুন- বুখারী শরীফের এই হাদিসে সাফিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহা কে বিবাহের কারন কি বর্ণিত আছে? এই হাদিসে এটা স্পষ্ট যে, গোত্রের সবচাইতে সম্মানিত ও সম্ভ্রান্ত মহিলাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিজের জন্য গ্রহন করার সুপারিশ করা হয়, এখানে রুপযৌবনের কোনও কথা বলে সুপারিশ করা হয় নি। অথচ মালাউন অভিজিৎ রায় লিখলঃ

‘‘আরেকজন সাহাবির মুখে নবীজি যখন সাফিয়ার রূপলাবণ্যের কথা শুনলেন, আল্লাহর রাসুল তাকে সামনে নিয়ে আসার জন্যে আদেশ দিলেন। নবীজী ভালভাবে তাকিয়ে দেখলেন এই অপূর্ব সুন্দর দেহবল্লরী তো তারই উপযুক্ত। নবী সেই সাহাবীকে বললেন, ‘একে আমার জন্যে রেখে তুমি অন্য কাউকে নিয়ে যাও’। (নাউজুবিল্লাহ)



1898954_1465513910334804_509180246_n


দেখেন আপনারা হাদীসে কোথাও বলা নাই যে সাফিয়ার রুপ লাবণ্য দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আকৃষ্ট হয়েছিলেন কিন্তু এই মালাউন অভিজিৎ রায় বুখারী শরীফের হাদীস বিকৃতি করে বলল যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নাকি সাফিয়ার রুপ দেখে পাগল হয়ে গেছিল। নাউযুবিল্লাহ। শুধু তাই নয় এই অভিজিৎ রায় তার নোটে ও ব্লগে এই কথাও বলেছে যে সাফিয়া নাকি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রক্ষিতা ছিল। নাউযুবিল্লাহ।"



ফারাবি শফিউর রহমান এর আগেও ব্লগার রাজীব হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন। যদিও পরে এ ব্যাপারে তার সম্পৃক্ততার কোন প্রমান মেলেনি। ধারণা করা হচ্ছে, এই ঘটনার জন্যও খুব শীঘ্রই গ্রেফতার হবেন ফারাবি।

No comments:

Post a Comment